,

চা বাগানে যৌনকর্মীকে হত্যা বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

বাহুবল প্রতিনিথি : বাহুবল উপজেলায় এক যৌনকর্মীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ‘দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টে’ কর্মরত মালির সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। মো. বদরুল ইসলাম নামে ওই মালি বাহুবল উপজেলার মিরপুর সাহেব বাড়ির বাসিন্দা।
সূত্র জানায়, এ ঘটনায় বদরুলের জড়িত থাকার সাক্ষ্য-প্রমাণ পুলিশের হাতে এসেছে এবং রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরিচ্যুত করেছে।
গত ২৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায় বাহুবল উপজেলার কামাইছড়া চা বাগানের বস্তি এলাকায় ঝোপের পাশে অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর পোড়া মরদেহের অংশবিশেষ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে সেদিনই বাহুবল মডেল থানায় মামলা হয়েছিল।
এ ঘটনায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে কামাইছড়া চা বাগানের মৃত স্বপন ভৌমিকের ছেলে সুমন ভৌমিককে (৪০) গ্রেপ্তারের পর গত ৩ জানুয়ারি আদালতে পাঠায় পুলিশ। তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। স্বীকারোক্তির তথ্য অনুযায়ী সন্দিগ্ধ আরেক আসামিকে গত ৯ জানুয়ারি গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।
তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সুমন ভৌমিক চা শ্রমিক পরিবারের হলেও স্থানীয় একটি ভাঙারি দোকানে কাজ করেন। গত ২৫ ডিসেম্বর রাত ৯টায় সুমন ভৌমিক তার বাড়িতে দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টের মালি বদরুল ইসলাম ও অপর আসামিকে নিয়ে মাদক সেবন করেন। পরে তারা ওই যৌনকর্মীকে (৩৫) কামাইছড়া চা বাগানের বস্তি এলাকায় ঝোপের পাশে নিয়ে যান এবং টাকার বিনিময়ে তিনজন পালাক্রমে যৌনমিলন করেন। পরে চুক্তি অমান্য করে আরও দুজন পুরুষ তার সঙ্গে যৌন কাজ করতে চাইলে ওই নারী বাধা দেন। এসময় তাদের মধ্যে বাকিবিতন্ডা হয় এবং একপর্যায়ে ওই নারীকে মুখে কাপড় বেঁধে মারধর করতে থাকলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় জড়িতদের একজনের মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাংক ফুটো থাকায় বোতলে পেট্রল রাখা ছিল। সেই পেট্রল ব্যবহার করে আগুন দিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ওই যৌনকর্মীর মরদেহ পুড়িয়ে তারা চলে যান। এতে মরদেহের মাথা ও ডান হাতের কয়েকটি আঙুল ছাড়া বাকি সব অংশ পুড়ে যায়।
এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার এবং আদালতে সুমনের জবানবন্দির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান। এছাড়া প্যালেসের মালিকে সন্দিগ্ধের তালিকায় রাখা হয়েছে বলেও পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।
এদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে- সুমন ভৌমিক আদালতের স্বীকারোক্তিতে মালি বদরুলের জড়িত থাকার তথ্য দিয়েছেন। এছাড়া যৌনকর্মীকে পুড়িয়ে মারার ঘটনাস্থলে অন্য আসামিদের সঙ্গে মো. বদরুল ইসলামের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে ঘটনার পর তাদের মধ্যে বহুবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের তথ্য থেকে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি মশিউর রহমান বলেন, পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর